মাগুরা টিভি ডেস্ক –
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া গ্রামে অর্থাভাবে প্রায় ৯ বছর ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকা একটি মসজিদের অনুকুলে বরাদ্দকৃত প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাথের ঘটনা ঘটেছে। এটি নিয়ে ওই গ্রামের সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ায় হয়েছে।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের মান্দারবাড়িয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় বেশ পুরণো একটি মসজিদ থাকলেও এর অনুকুলে বৈধ দলিল দস্তাবেজ না থাকায় মসজিদটি সরকারি অনুদান থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বসম্মতিক্রমে ওই মসজিদের পাশেই আশরাফিয়া জামে মসজিদ নামে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। যেখানে নজরে জিলানী নামে এক ব্যক্তি নিজের মালিকানাধিন সাড়ে ৬ শতাংশ জমি মসজিদের অনুকুলে লিখে দেন। এ অবস্থায় গ্রামের লোকজন ২০১৫ সালে নিজেদের অর্থায়নে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। মসজিদের কাঠামোও তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু মাঝপথে বাঁধ সাধেন একই গ্রামের শরিফ আলিমুজ্জামান, কাজী সাইদুর রহমান সহ বেশ কয়েকজন। তারা নির্মাণ কাজের অর্থ নিজেদের মাধ্যমে ব্যয় করার দাবি জানায়। কিন্তু উদ্যোক্তারা রাজী না হওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ১৫-২০ জন কমবেশি আহত হয়।
মসজিদ নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা জানান, মসজিদ নির্মাণ কাজের জন্যে গ্রামের সাধারণ মুসল্লিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আকিজ গ্রæপ অব কোম্পানীর পক্ষ থেকে মসজিদটির নির্মাণ কাজের জন্যে ৩০ লক্ষ টাকার ঘোষণা দিয়েছে। প্রথম কিস্তিতে তারা মহম্মদপুরে জনতা ব্যাংকে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকাও জমা করেছে বেশ আগে। কিন্তু বিরোধী পক্ষের কারণে নির্মাণ কাজ করা যাচ্ছে না। দীর্ঘ ৯ বছর কাজ বন্ধ থাকায় মসজিদের অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সম্প্রতি আবারও নির্মাণ কাজ এগিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে গত মাসের ১৬ তারিখে নির্মাণ ব্যায় মেটাতে টাকা তুলতে তারা ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারে কোনো টাকা নেই। মসজিদ নির্মাণে বাধা দেওয়া গোষ্ঠির সদস্য শরীফ আলিমুজ্জামান নিজেকে মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং কাজী সাইদুর রহমান রহমান সেক্রেটারি পরিচয় দিয়ে ভূয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে সমুদয় অর্থ তুলে আত্মসাত করেছেন।
এ অবস্থায় চলতি মাসের ৯ মে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে ওই গ্রামের ফরিদ শরীফ নিজে বাদি হয়ে মহম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আর এই মামলার পর থেকেই জালিয়াত সংশ্লিষ্টরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। যেকোনো মুহূর্তে নতুন করে গ্রামের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠতে পারে।
মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ ফরিদ শরীফ বলেন, মামলা দায়েরের পর দু’জনকে গ্রেফতার করা হলেও একজন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এখন তারা ক্ষুব্ধ হয়ে অশান্তি চেষ্টা চালাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। মসজিদ নির্মাণ নিয়ে নতুন করে অশান্তি করতে গেলে মুসল্লিরা সেটি প্রতিহতের চেষ্টা করবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ বোরহান উল ইসলাম বলেন, অনুদানের অর্থ আত্মসাথের দায়ে ইতোমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রামের মধ্যে যে পক্ষই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করুক সেটি প্রতিহত করা হবে। পুলিশ এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখছে।
সূত্র – মাগুরা প্রতিদিন
You cannot copy content of this page